পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে বিগত ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। যারা নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল তাদের মুখ এখন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। এখন তারা আবোল তাবোল বলা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘দেশে বিগত ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এ নির্বাচনে সহিংসতা হয়নি বললেই চলে, যেখানে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে এ নির্বাচন নিয়ে দেশী বিদেশী বহু ষড়যন্ত্র ছিল। এ নির্বাচন বন্ধ করার চক্রান্ত ছিল। তার পরেও দেশে উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যারা নির্বাচন বর্জন করেছিল, বানচাল করতে চেয়েছিল, তারা ভোটের পরে যখন দেখলো সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা/অভিনন্দন বার্তার বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন তখন তাদের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। এখন তারা আবোল তাবোল বলা শুরু করেছে’।
জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নির্বাচনে ভোট কাস্টের উদাহরণ হিসেবে হাছান মাহমুদ বিভিন্ন দেশে ভোট পড়ার তথ্য সংসদে জানাতে গিয়ে বলেন, রোমানিয়ায় ২০২০ সালের নির্বাচনে ৩১.৮৪ ভোট পড়েছে। হংকং এ ৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে। বুলগেরিয়ায় ২০২২ সালে ৩৭.৯৮ শতাংশ, আয়ারল্যা-ে ৪৩.৮৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। পর্তুগালে ৩৯.২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশ সেখানে নির্বাচন প্রতিহতের কোন ঘোষণা ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশে কিভাবে নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা হয় তা সবাই জানেন। কিন্তু এর পরেও যে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে তাকে ‘ফেসটিভ ইলেকশন’ বলা চলে। যদিও জানুয়ারীর ৫ তারিখ পর্যন্ত আগুন দিয়ে ট্রেনে একটি শিশুসহ পুরো পরিবারকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, তা না হলে নির্বাচনে আরো ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ভোট পড়তো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের পরে যে অপশক্তি নির্বাচন বর্জন করেছিল তারা উম্মুখ হয়ে বসেছিল বিশ্ববাসী এ নির্বাচন নিয়ে কি বলে। কিন্তু বিশ্বর প্রায় অধিকাংশ দেশ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে টানা চার বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা শুভেচ্ছা জানিয়েছে। তখন তারা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছে।’ হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্বর বহু দেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে, আরো ৩২ টি সংস্থা- জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোপীয় কমিশন, বিশ্ব ব্যাংক সহ আন্তর্জাতিক সংস্থা শুভেচ্ছা জানিয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীরতর করার কথা বলেছেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বর যেখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান সেখানেই তিনি ‘সেন্টার অব এট্র্যাকশন’ হন। গাজায় নির্বিচারে যে গণহত্যা হচ্ছে তা নিয়ে বিশ্বনেতারা যখন নিশ্চুপ, নির্বিকার, সেখানে এ গণহত্যার বিরুদ্ধে জোরালোভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে গণহত্যা বন্ধ করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকে গাজায় গণহত্যা হচ্ছে, সেখানে ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এর বেশীভাগই নারী ও শিশু। আর পৃথিবী অসহায় হয়ে তাকিয়ে রয়েছে বা নীরব থাকছে। এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও অনেকেই নিরব থাকছে। যা অপরাধকে সমর্থন জানানোর সামিল। কিন্তু জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তিনি জেলেনেস্কিকে যুদ্ধ বন্ধের পথ বের করার কথা বলেছেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, এইচ এম ইব্রাহীম, এম আব্দুল লতিফ, একরামুল করিম চৌধুরী, মকবুল হোসেন, খান আহমেদ শুভ, জাহিদ আহসান রাসেল ও সোলায়মান সেলিম। জাসদের সদস্য এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন এবং স্বতন্ত্র সদস্য আব্দুল মজিদ, আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার, সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক ও কামরুল আরেফিন।