মৃত্যুর সঙ্গে লড়া ছেলেকে নিয়ে গান গায়লেন কুমার বিশ্বজিত

কুমার বিশ্বজিত ও তার ছেলে কুমার নিবিড়কুমার বিশ্বজিত ও তার ছেলে কুমার নিবিড়

বাংলার কিংবদন্তি সুরকার, গীতিকার ও গায়ক কুমার বিশ্বজিতের ছেলে ‘কুমার নিবিড়’ হাম্বার কলেজের শিক্ষার্থী। গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি টরন্টোর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন নিবিড়। দুর্ঘটনায় তার তিন সহপাঠীর মৃত্যু হলেও এক বছর হতে চলল কানাডার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন নিবিড়। তার পাশে থেকে সুস্থতা কামনায় কষ্ঠের প্রহর গুনছেন বাবা কুমার বিশ্বজিৎ। থেমে গেছে তার নতুন গানের চর্চা। মাঝে একবার এসেছিলেন দেশে। ছেলেকে নিয়ে তখন গেয়ে গেছেন একটি গান। সেই গানটি মুক্তি পাবে আগামীকাল।
মূলত ছেলেকে নিয়ে বিশ্বজিতের মানসিক অবস্থাটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন গীতিকবি হাসানুজ্জামান মাসুম।‘বৃষ্টি এখন আর ভালো লাগে না, কান্নার শব্দ মনে হয়মেঘলা আকাশ কেমন যেন বেদনার চাদরে ঢেকে রয়আমার বুকে কেন বৃষ্টি অঝোরে ঝরে পড়ছেতবু সারাক্ষণ আমার হৃদয় মন নিবিড় অপেক্ষা করছে’—এমন কথার গানটির সংগীত পরিচালনা করেছেন কিশোর দাশ। গানের শিরোনাম ‘নিবিড় অপেক্ষা’।
গানটি নিয়ে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘এটাকে আমি গান বলতে চাই না। এটা একজন পিতার আর্তি। আমি ভাবিনি, নিবিড় ও তার সহপাঠীদের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর আবারও গাইব। কারণ, সেই মানসিক শক্তি বা আগ্রহটাই মরে গেছে আমার। মাসের পর মাস এই দূর পরবাসে ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, ওর কণ্ঠ শোনার অপেক্ষায়। নিবিড়ের তিন সহপাঠীর অনুপস্থিতি আমাকে প্রতিনিয়ত পিতৃসমতুল্য বেদনায় আচ্ছন্ন করে। ’মূলত সুরকার কিশোর ও গীতিকার মাসুমের অনুরোধেই শেষ পর্যন্ত গানটি গেয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। তিনি বলেন, ‘মাঝে আমি কয়েক দিনের জন্য ঢাকায় গিয়েছিলাম। তখন কিশোর ও মাসুম গানটি করার জন্য বারবার অনুরোধ করছিল। কিন্তু আমি ইগনোর করছিলাম। কারণ, গানটা তো প্রাণ দিয়ে করেছি আজীবন। এখন তো আমার ভেতরে সেই প্রাণটা নেই। ওরা এরপরও একটা ডামি বানিয়ে আমাকে শোনায়। শোনার পর মনে হলো, কথাগুলো তো আমারই। সুরটাও আমার ভেতরের হাহাকারের মতো। যেগুলো আসলে প্রকাশ করতে পারছি না।’প্ল্যাটফর্ম এন্টারটেইনমেন্টের পরিবেশনায় ‘নিবিড় অপেক্ষা’ গানটি একযোগে দেশের ১৮টি ব্যানার থেকে প্রকাশ পেতে যাচ্ছে ২৫ জানুয়ারি। ভিডিও নির্মাণ করেছে প্রেক্ষাগৃহ।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *