বিপজ্জনকভাবে ভূমধ্যসাগর পার হওয়ার চেষ্টার সময় চলতি মাসে সাগরে ডুবে প্রায় ১০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়া ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টাকারী মানুষের সংখ্যাও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএমের বরাত দিয়ে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে মধ্য ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে প্রায় ১০০ অভিবাসী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন বলে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) জানিয়েছে।
এছাড়া চলতি মাসের এই পরিসংখ্যান গত বছরের একই সময়ের মধ্যে রেকর্ড করা সংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বলে সোমবার জানিয়েছে অভিবাসন সংস্থাটি।
রয়টার্স বলছে, রোমে ইতালি-আফ্রিকা সম্মেলনের সময় এই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। সেখানে দুই ডজনেরও বেশি আফ্রিকান নেতা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং ইউরোপে নথিবিহীন অভিবাসন রোধ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে সম্মেলনে অংশ নেন।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ বলেছেন, ‘মৃত্যু এবং নিখোঁজের সর্বশেষ এই পরিসংখ্যানটি এটিই জোরালোভাবে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আমাদের ব্যাপকভিত্তিক ব্যবস্থা প্রয়োজন যার মধ্যে (অভিবাসনের) নিরাপদ এবং নিয়মিত পথগুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে… আর এটিই একমাত্র সমাধান যা অভিবাসীদের পাশাপাশি দেশগুলোকেও সমানভাবে উপকৃত করবে।’
আইওএম-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ভূমধ্যসাগরে ৩ হাজার ৪১ জন অভিবাসী মারা গিয়েছিলেন বা নিখোঁজ হয়েছিলেন। আর ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪১১ জন।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে, ইতালীয় উপকূলের দিকে একটি নৌকায় রওনা হওয়ার পর প্রায় ৪০ তিউনিশিয়ান অভিবাসী নিখোঁজ হন। তিউনিসিয়ার দারিদ্র্য এবং সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা লোকদের জন্য ভূমধ্যসাগর পারাপারের প্রধান প্রস্থান পয়েন্ট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে লিবিয়া।
মূলত ২০১১ সালে লিবিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। আর এরপর থেকে সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করা অভিবাসীদের জন্য লিবিয়া একটি প্রধান ট্রানজিট রুট হয়ে উঠেছে।