___সৈয়দ মাকসুদুল আলম (শিতল মাকসুদ)
পরের সংসারের একটা বিকেল আমায় ভাবিস,দোহাই লাগে!
দোহাই লাগে,সিঁদুর ছোয়া এলো চুলের
যে চুল হঠাৎ হাত ছুঁয়ে ছিলো তোর অগোচরে!
সাজানো ঘরের ধুল ঝাঁড়তে নাহয় আমায় ভাবিস,দোহাই লাগে!
দোহাই লাগে,নাজুক মনের অব্যক্ত প্রেমের
যে প্রেম তুই ঝেঁড়ে ফেলেছিস সযতনে !
বারান্দায় হঠাৎ উড়ে আসা অবহেলার কাক
হুসস… করে তাড়াতে নাহয় আমায় ভাবিস,দোহাই লাগে!
দোহাই লাগে,যখন তখন জ্বালাতনের
বেহাল্লা চোখের কর্কষতায় তোকে দেখার!
হিসেব কষে জীবন যদি গোলমেলে মনে হয়,
গোলক ধাঁধায় বন্দি এ আমায় ভাবিস,দোহাই লাগে!
দোহাই লাগে, তাল হারানো বেসামাল ঈমানের
তোকে নিয়ে যে নরক বাসরের অপস্বপ্ন সাজায়!
কবি ও লেখক পরিচিতি
Syed Maksudul Alam
Teacher
Fatullah,Narayanganj
চিরকুট
___সৈয়দ মাকসুদুল আলম(শিতল মাকসুদ)।
“”ইন্নালিল্লাহ ব্র্যাকেডে নিয়ে টিভি পত্রিকার শিরোনাম হওয়ার স্বাদ কোনদিনও নেই,
আমি শুধু তোর দু’এক পলের সামলে নেয়া অশ্রু হতে চাই…””
চিরকুটটা সেদিন ফেলে দিতে গিয়েও কেন যে ডায়রিতে গুঁজে রেখেছিলাম তার কোন সদুত্তর আজো খুঁজে পাওয়া হয়নি । অথচ উচিৎ ছিল কাগজের টুকরোটা কুঁচিকুঁচি করে ছিঁড়ে ওর মুখে ছুঁড়ে মারা।
কতবড় সাহস হারামজাদার! না কোন চেহারাসুরৎ, না কোন ভবিষৎ সম্ভাবনা, বাপের হোটেলে খাবে সে ভাগ্যওতো নেই,বাপতো কবেই…কাজের মধ্যে সারাদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট টানার ভান! দিনে দুটোর বেশি কেনার সাধ্যওতো নেই।সারা সেমিস্টার একটা খাতার ভরসাতেই পার, লোকমুখে শোনা তার মধ্যেও নাকি আবার পাতার ফাঁকে ফোঁকরে কাব্য চর্চার হাট জমে।
কোন কুক্ষণে যে ব্যাটার চোখ পরেছিলো আমার চোখে কে জানে? তাতেই নাকি প্রেমে হাবুডুবু… অবশ্য সাদা চামড়ার দেখলে এমনেই ছেলেরা লাইন ধরে, একদিন এক বান্ধবী বলছিলো, সাবকন্টিনেন্টের অর্ধেক ছেলের সফলতার মাপকাঠি হলো-‘কে কত ফর্সা বউ পেলো’!
তারপর থেকে সেই যে শুরু হলো, রেস্ট্রুরেন্টে যাই -আশেপাশের কোন টেবিলে কোন বন্ধুর সাথে…
শপিং গেলে -বিপরীত পাশের কোন দোকানে, এমন কী কিভাবে কিভাবে সব বান্ধবিদের ফ্রেন্ডজোনে এন্ট্রি করে নিলো!
ফ্রেন্ডজোনড হলেও বেটা কোনদিনও কারো প্রিয় হতে পারেনি! আমি ওকে বুঝারর চেষ্টা না করলেও এটা ঠিকই বুঝতে পারতাম,আমার কিছু কিছু বান্ধবীর ও শুধু এ কারনে প্রিয় হতে পারেনি যে, একটা পুরুষ অন্য একটা নারীর প্রতি এতটা অবসেশ্ড কীভাবে হয় :)!
অবসেশনের নমুনা দিতে গেলে উপন্যাস হয়ে যাবে…
ওই তো একবার বাড়ির ঠিকানা খুঁজতে রিক্সার পিছন পিছন দৌড়ে আসা… আহা বেচারা পিছন পিছন যে পাল্টা রিক্সা নেবে সে টাকাটাও সেদিন মনে হয় পকেটে ছিলোনা!
কী ব্যাপার… আমি কী কাদছি! চোখটা জলে আবছা হয়ে এলো!
না… না… ওর কথা ভেবে অশ্রু আসবে কেনো!
“”আমি শুধু তোর দু’এক পলের সামলে নেয়া অশ্রু হতে চাই…””
আচ্ছা এ ধরনের কথা কেন চিরকুটে লিখতে গেলো!
মানুষতো প্রেমের প্রস্তাবে আকাশের চাঁদ নিয়ে লিখে,চিলেকোঠায় ঘর বাঁধার কথা লিখে, লিখে সাত সমুদ্র জয়ের কথা… ও এতোটা বোকা কেন?
আরেকদিন মুঠোফোনে আননৌন নাম্বারে মেসেজ এসেছিলো-
“”তোমার মাথার সিঁদূর বন্ধু,
আমার হৃদয়ের অনলে পুড়ে হবে লাল!””
কখনো কাউকে বলা হয়নি, কিন্তু পড়েই ডিলেট করে দেয়া মেসেজ টা যে কার পাঠানো সেটা আমি কিন্তু লালের শেষে ‘!’ বিস্ময় চিহ্ন দেখেই বুঝে গেছি! কবিতার নামে ছাইপাস যাই লিখতো সবকিছুতেই অহেতুক বিস্ময় চিহ্ন আর তিন ডট এর ছড়াছড়ি…
একদিন আমায় শুনিয়ে শুনিয়েই ওর এরক বন্ধুকে বলছিলো- এই তিনটা ডট আসলে তান ফোঁটা অশ্রুকে রিপ্রেজেন্ট করে! তিন ফোঁটা অশ্রু আবার রিপ্রেজেন্ট করে একটা সামলে নেয়া কান্না, যে কান্নার কোন সামাজিক মর্যাদা নেই, তোর কারো জন্য কান্না পাচ্ছে অথচ তার জন্য কাঁদার তোর কোনো অধিকার নেই….
“”আমি শুধু তোর দু’এক পলের সামলে নেয়া অশ্রু হতে চাই…””
সেদিন তবে আমার চোখেও কী তিনটা ডট ভর করেছিলো?
বাবার ঠিক করা পাত্রের সাথে রেস্ট্রুরেন্ট থেকে বের হয়ে বাসায় ফিরতে যেই না রিক্সায় উঠবো…
স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম কেও একজন তীব্র আকর্ষণে রাস্তার ওপার থেকে দৌড়ে আসছিলো রিক্সার পিছন পিছন অনেকটা পথ যাবে ভেবে…
মাঝরাস্তায় ট্রাকটা এসে থমকে দিলো,
আর কোনো দিন পিছু ছুটে নি।
অথচ এখনো রিক্সায় উঠলে মাঝে মাঝে কেন যেন মনে হয়… একজোড়া পা দৌড়ে আসছে পিছু পিছু… মাঝপথে ব্যাল্ট ছিঁড়ে যাওয়ার একটা স্যান্ডেল পথে ফেলেইই দৌড়াচ্ছে…
এ কী! আবারো কী চোখে জল!
কিন্তু আমারতো ওর জন্য অশ্রু ঝড়ানোর কথা না!
“tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo.