আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গতকাল শুক্রবার (২৩মার্চ) কনসার্টর রাজধানী মস্কোর কনসার্ট হলে ঘটে যাওয়া হামলাটিকে দেশটির আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যায়িত করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম আরটি। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৬০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে বিবিসি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার মস্কোর ক্রোকাস সিটি হল কমপ্লেক্সের কনসার্ট হলে এই হামলা চালানো হয়। ইতোমধ্যে হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামলার বিস্তারিত ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ধীরে ধীরে সামনে আসছে।
আরটি লিখেছে, তবে যেভাবে হামলাটি চালানো হয়েছে তাতে এটি প্রতীয়মান হয় যে হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং যেভাবে হামলা চালালে হতাহতের সংখ্যা সর্বোচ্চ হবে সেভাবেই হামলাটি চালানো হয়।
সন্ত্রাসীরা রাশিয়ার রাজধানীর পশ্চিম উপকণ্ঠে অবস্থিত ক্রাসনোগর্সকের ক্রোকাস সিটি হলে হামলাটি চালায়। ২০০৯ সালে চালু হওয়া একটি বিনোদন কেন্দ্রের একটা অংশ এই কনসার্ট হলটি। পুরো কমপ্লেক্সে একটি শপিং মল ও একটি হোটেলও রয়েছে।
কনসার্ট হলটির ধারণক্ষমতা সাড়ে ৭ হাজার এবং সন্ত্রাসীরা যখন আক্রমণ শুরু করে তখন হলটি প্রায় পরিপূর্ণ ছিল। জনপ্রিয় রক ব্যান্ড ‘পিকনিক’ পারফর্ম করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পাঁচজন বন্দুকধারী হামলাতে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের হাতে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্যান্য সামরিক অস্ত্র ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
হামলাকারীরা ওই হলের নিরস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করে ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। এ সময় তারা ভেতর থেকে হলটি বন্ধ করে রাখে।
কনসার্ট হলের একেবারে ভেতরে ঢুকে সেখানে থাকা চেয়ারগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। ওই আগুন পুরো বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র বলছে, মস্কোতে একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার তথ্য ছিল তাদের কাছে। বিষয়টি তারা মস্কোকে এ মাসের শুরুর দিকে জানিয়েছিলও।
এদিকে হামলার পরই ক্রেমলিন সরাসরি কাউকে দায়ী না করলেও কোনো কোনো রুশ আইনপ্রণেতা এ হামলার সঙ্গে ইউক্রেন জড়িত বলে অভিযোগ করেন।
সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ টেলিগ্রাম অ্যাপে লিখেছেন যে হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা যদি ইউক্রেনীয় হয়ে থাকে, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করতে হবে এবং সন্ত্রাসী হিসাবে তাদের ধ্বংস করে দিতে হবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক হামলার সঙ্গে ইউক্রেনের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।