পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এম্বাসেডর আউটরিচ প্রোগ্রামের আওতায় ২৪টি দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানগণ বঙ্গবন্ধু টানেলসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প স্বচক্ষে দেখেছেন। তাঁরা বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করবেন। এতে বর্তমান সরকারের নের্তৃত্বে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন সম্পর্কে তাঁরা আরো বেশি ধারণা পাবে এবং বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা তাঁদের দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। সুতবাং, কূটনীতিকদের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও সম্ভাবনার খবর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এম্বাসেডর আউটরিচ প্রোগ্রামের আওতায় ২৪টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক সদস্যদের নিয়ে টানেলসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে রেলযোগে কক্সবাজার যাওয়ার প্রাক্কালে রেলস্টেশনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন হয়েছিল ১৯৩০ সালে। কিন্তু ১৯০০ সালের শুরুর দিকে চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন করার পরিকল্পনা হয়েছিল। দেশ বিভাগ হলো, পরে বাংলাদেশ হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের বিধ্বস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠন করার আগেই জাতির পিতাকে হত্যা করায় সে যাত্রায়ও এ স্বপ্ন আলোর মুখ দেখেনি। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই জনপদের মানুষের ১২৫ বছরের অধরা স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
এসময় মন্ত্রী আরো বলেন, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের নিয়ে আজকে কক্সবাজার যাচ্ছি। এটি শুধু আমার কাছে নয়, অনেকের কাছেই এটি ট্রেনে করে কক্সবাজার যাওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা। এতে করে তাঁরা কক্সবাজারে অবস্থিত বিশে^র দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে আরো জানবেন ও নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য উপভোগ করবেন।
কূটনীতিকদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শন কিংবা প্রত্যাবাসন নিয়ে কোন কথা হবে কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে তাঁদের সাথে প্রতিনিয়ত আলোচনা করে যাচ্ছি। এখানে যারা এসেছেন তাঁদের অনেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন, এবারও সুযোগ হলে যাবেন।
আউটরিচ প্রোগ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন দেশের ক‚টনীতিকদের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সফরে এসে তাঁরা চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ঘুরে দেখেছেন যেটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সড়ক টানেল। এটি দেশের মানুষ ১৫ থেকে ২০ বছর আগে কল্পনাও করেনি, অথচ তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। কূটনীতিকরা সে বাস্তবতার দৃশ্য নিজের চোখে দেখেছেন। সুতরাং, এ ধরণের সফর দেশের সাথে বিদেশি কূটনীতিকদের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ফ্রান্স এবং এফএও, আইইউটি, একেডিএন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ২৪ জন মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনৈতিক সদস্য এই আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।