নারীদের স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রতিদিন কিছু প্রয়োজনীয় ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণ দরকার হয়। আর পুরুষের চেয়ে নারীর শারীরিক বৈশিষ্ট্য বা কার্যকলাপ কিছু ক্ষেত্রে আলাদা হওয়ায় এটা বেশি প্রয়োজনীয়। কারণ, নারীর সন্তান জন্মদান এবং প্রতি মাসের একটা নির্দিষ্ট সময় ঋতুচক্রের মতো শারীরিক অসুস্থতার মোকাবিলা করতে হয়। মূলত এই কারণে নারীর শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি হতে পারে। তাই তো এসবকিছু সামলে নারীকে সুস্থ থাকতে হলে প্রয়োজনীয় ৫ ভিটামিন নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে।
প্রজনন স্বাস্থের জন্যে ভিটামিন এ : নারীর জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিনের একটি হলো ভিটামিন এ। এই ভিটামিন দৃষ্টি ক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই জন্যেই একজন নারীকে ভিটামিন এ যুক্ত খাবার নিয়মিত খেতে হবে। এতে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, চোখ ভালো থাকবে। তেমনি উন্নতি ঘটবে প্রজনন স্বাস্থ্যেরও।
স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতায় ভিটামিন বি : নারীদেহের কোষের বিকাশ এবং কার্যকারিতাকে সাহায্য করে ভিটামিন B3। এটি DNA এবং ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্কের কোষ তৈরি ও মেরামত করতে সাহায্য করে। এই ভিটামিন পুষ্টিকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। ভিটামিন বি৬ নারীর শরীরে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটি নারীদের গর্ভবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতেও কাজ করে। ভিটামিন বি৯ গর্ভবতী নারীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন। এই ভিটামিন ডিএনএ এবং আরএনএ গঠনে সাহায্য করে। ভিটামিন বি১২ মস্তিষ্কের বিকাশ এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজন হয়।
নারীদেহের বৃদ্ধি ও বিকাশে ভিটামিন সি : গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েদের সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন হলো ভিটামিন সি। এই ভিটামিন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি নারীদেহের বৃদ্ধি এবং বিকাশে সাহায্য করে। হাড়, দাঁত এবং টিস্যু মেরামতে কাজ করে ভিটামিন সি। সেইসঙ্গে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কাজ করে। তাছাড়া রক্তনালী, ত্বক এবং লিগামেন্ট সুস্থ রাখতে প্রয়োজন হয় ভিটামিন সি।
গর্ভবতী নারীর জন্যে ভিটামিন ডি : ভিটামিন ডি গর্ভবতী নারীর জন্য প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন। এটি হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। সেইসঙ্গে বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। ভিটামিন ডি নারীর শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং প্রজনন ব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। তাই নারীকে প্রতিদিন ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার মুখে খাওয়ার পাশাপাশি রোদে বসার অভ্যাস করতে হবে।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় ভিটামিন ই : আরেকটি প্রয়োজনী ভিটামিন হলো ভিটামিন ই। এটিরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, চোখের স্বাস্থ্য এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা প্রজনন ব্যাধি প্রতিরোধেও কাজ করে। এই ভিটামিন নারীদের পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রেখে মাসিক চক্র নিয়মিত রাখে এটি।