সরকারী নিষিদ্ধ চলমান থাকা অবস্থায় সুন্দরবনে অবৈধভাবে প্রবেশ করে কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার অপরাধে ২০ জেলেকে আটক করেছেন ঢাংমারী ষ্টেশনের বনরক্ষীরা। মঙ্গলবার রাতে বন সংলগ্ন পশুর নদীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে কাকড়া ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম সহ ১১টি নৌকাও জব্দ করে বন রক্ষীরা।
ঢাংমারী ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ মহসিন আলী জানান, কাকড়ার প্রজনন মৌসুম চলছে। তাই প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ১ জানুয়ারী থেকে ২৮ ফেব্রয়ারী এ দুই মাস কাকড়া ধরা বা কোন জলযান দিয়ে পরিবহন সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে সরকার। কিন্ত মোংলা উপজেলা সনোইলতলসহ সুন্দরবন সংলগ্ন কয়েকটি এলাকার লোকজন অবৈধ ভাবে বনে প্রবেশ করে কাকড়া আহরণ ও বিষ দিয়ে মাছ শিকার অব্যাহত রেখেছে। এমন খবরে পুর্ব সুন্দরবনের চাদঁপাই রেঞ্জে সহ অন্যান্য টহল অফিসও তাদের টহল জোরদার করে প্রতিনিয়িত অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রয়ারী) রাতে একদল কাকঁড়া আহরণকারী অবৈধভাবে বনে প্রবেশ করছে এমন গোপন সংবাদ আসে বন বিভাগের কাছে। তাই ঢাংমারী ফরেষ্ট অফিস থেকে কয়েকজন বনরক্ষিদের সাথে নিয়ে ষ্টেশন কর্মকর্তা নিয়ে অভিযানে নামে। মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে কাকড়া ধরার বিভিন্ন সরঞ্জামসহ পশুর নদী দিয়ে বনে প্রবেশের সময় অভিযান চালিয়ে ২০ জেলেকে আটক করা হয়। এসময় তাদের সাথে থাকা ১১টি ডিঙ্গি নৌকাও জব্দ করে ঢাংমারী ষ্টেশনের বনরক্ষিরা।
আটককৃতরা হচ্ছে-আইযুব আলী খানের ছেলে সোহাগ খান, নুর আলী ফকিরের ছেলে মামুন ফকির, অদিত মন্ডলের ছেলে কৃষ্ণ মন্ডল, হুমায়ুনের ছেলে নুর সাদেক, ইউনুচ শেখের ছেলে শহীদ শেখ, মোঃ মুছল্লির ছেলে হরমুজ মুছল্লি, মোজাফর গাজীর ছেলে সুজন গাজী, রুস্তম শেখ’র ছেলে আবদুল্লা শেখ, কাদের শেখের ছেলে রবিউল শেখ, লিয়াকতের ছেলে মোকলেস শেখ, মৃত জুলফিকারের ছেলে সাইফুল ফকির, শওকত শেখের ছেলে হাসান শেখ, গোলাম মোস্তাফার ছেলে মোঃ বোরহান, নুর ফকিরের ছেলে মোঃ শাহদত, হোসেন মল্লিকের ছেলে জসিম মল্লিক, মৃত হাসেম মল্লিকের ছেলে ছয়ফুল্লা মল্লিক, নুর মোহাম্মাদ সরদারের ছেলে জোবায়ের সরদার, দুলাল শেখ’র ছেলে সবুজ শেখ, নাজু গাজীর ছেলে হোসেন গাজী, লোকমান গাজীর ছেলে ইয়াসিন গাজী। তাদের সকলের বাড়ি মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ও রামপালের কাটা খাল এলাকার বিভিন্ন গ্রামে বলে জানায় বন বিভাগ।
এসময় আটককৃতদের নৌকায় তল্লাশী চালিয়ে কাকড়া ধরার ফাঁদ, কুইচা (কাকঁড়ার খাবার) ও ক্যারেটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা সহ আইনানুগ ব্যাবস্থার প্রস্তুতি চলছে।
চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী ফরেষ্ট ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ মহসিন আলী বলেন, নিষিদ্ধ এই সময়ে জেলে নামধারী অসাধু ব্যক্তিরা গোপনে বনে প্রবেশ করে বিষ দিয়ে মাছ ও ফাঁদ পেতে কাঁকড়া আহরণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। গোপন সংবাদ পেয়ে অভিযান চালিয়ে আমরা তাদের আটক করতে সক্ষম হয়েছি। পরবর্তী ব্যাবস্থার প্রস্তুতি চলছে।